বাংলাদেশে ঘোড়ার মাংস বিক্রি: গরুর মাংসে ভেজালের শঙ্কা

- আপডেট সময় : ০২:১০:০১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ মার্চ ২০২৫
- / ২৮ বার পড়া হয়েছে
সম্প্রতি দেশের এক ইসলামি বক্তার ঘোড়ার মাংস খাওয়া প্রসঙ্গে দেওয়া বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর, দেশে ঘোড়ার মাংস জবাই ও বিক্রির হিড়িক পড়েছে। রাজধানীসহ বিভিন্ন এলাকায় এ নিয়ে বেশ আলোচনা ও বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয় বাজারগুলোর খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঘোড়ার মাংসের দাম প্রতি কেজি ২৫০ টাকা, যা গরুর মাংসের তুলনায় তিনগুণেরও কম। গরুর মাংস যেখানে ৭৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, সেখানে অনেকেই কম দামের কারণে ঘোড়ার মাংসের দিকে ঝুঁকছেন। তবে সাধারণ জনগণের আশঙ্কা, কিছু অসাধু ব্যবসায়ী এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে গরুর মাংসে ঘোড়ার মাংস মিশিয়ে বাজারজাত করতে পারে।
ভোক্তাদের উদ্বেগ
ঢাকার মোহাম্মদপুরের এক ক্রেতা বলেন, “আমরা তো দোকান থেকে গরুর মাংস কিনে আনি, কিন্তু কীভাবে বুঝবো যে এতে অন্য কোনো মাংস মেশানো হয়নি?” একই ধরনের শঙ্কা প্রকাশ করেছেন আরও অনেকে। বিশেষ করে রেস্টুরেন্ট ও হোটেলগুলোতে সস্তা দামের কারণে গরুর মাংসের পরিবর্তে ঘোড়ার মাংস ব্যবহারের সন্দেহ বাড়ছে।
বিশেষজ্ঞদের মতামত
পুষ্টিবিদদের মতে, ঘোড়ার মাংসের পুষ্টিগুণ গরুর মাংসের কাছাকাছি হলেও স্বাদ ও গঠনগত পার্থক্য রয়েছে। তবে স্বাস্থ্যঝুঁকি এড়াতে ভোক্তাদের সচেতন হওয়া জরুরি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের খাদ্য ও পুষ্টিবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মাহমুদ হাসান বলেন, “যদি যথাযথ তদারকি না থাকে, তাহলে বাজারে গরুর মাংসের সঙ্গে ঘোড়ার মাংস মিশিয়ে বিক্রির আশঙ্কা থেকেই যায়। সরকারের উচিত দ্রুত বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করা।”
সরকারি পদক্ষেপ ও মনিটরিং
বাজারে যাতে গরুর মাংসে ভেজাল না মেশানো হয়, সে বিষয়ে এখনো কোনো সরকারি সংস্থা সরাসরি নজরদারি শুরু করেনি। তবে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের একজন কর্মকর্তা বলেন, “আমরা এ বিষয়ে খোঁজখবর নিচ্ছি। যদি কেউ প্রতারণার মাধ্যমে মাংসে ভেজাল মেশায়, তাহলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
কীভাবে আসল গরুর মাংস চিনবেন?
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গরুর মাংস ও ঘোড়ার মাংসের মধ্যে কিছু মৌলিক পার্থক্য রয়েছে। গরুর মাংসের চর্বি সাদা ও শক্ত হয়, অন্যদিকে ঘোড়ার মাংসের চর্বি অপেক্ষাকৃত নরম ও কিছুটা হলদে রঙের হয়। এছাড়া ঘোড়ার মাংস বেশি আঁশযুক্ত ও হালকা মিষ্টি গন্ধযুক্ত হতে পারে।
শেষ কথা
সাধারণ ভোক্তাদের এ নিয়ে সতর্ক থাকা জরুরি। সরকার ও সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর উচিত বাজার মনিটরিং জোরদার করা, যাতে অসাধু ব্যবসায়ীরা গরুর মাংসে ভেজাল মিশিয়ে প্রতারণা করতে না পারে। অন্যথায়, খাদ্য নিরাপত্তা নিয়ে বড় ধরনের সংকট তৈরি হতে পারে।
(এই প্রতিবেদন প্রস্তুতের সময় বাজার থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে, তবে পরিস্থিতি পরিবর্তনশীল হতে পারে। নতুন আপডেট পেলে তা পরবর্তী প্রতিবেদনে প্রকাশ করা হবে।)